রাজ্য সরকার একের পর এক জনমুখী প্রকল্প চালু করে রাজ্যের প্রায় সমস্ত অর্থই শেষ করে ফেলেছেন। এদিকে রাজ্যে সরকারি কর্মীরা DA পাচ্ছেন না বহুদিন ধরে এবং একের পর এক আন্দোলন ও আদালতের আইনি পদক্ষেপ নিয়েও কার্যকরী ব্যবস্থা হচ্ছে না। অন্যদিকে আবার শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন রাজ্যের যে আর্থিক অবস্থা তাতে জানুয়ারি মাস থেকে রাজ্য সরকার আর বেতন দিতে পারবে না রাজ্যের সরকারি কর্মীদের। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের সরকারি কর্মীরা দুশ্চিন্তায় ভুগছেন। গত সেপ্টেম্বর মাসে এক অনুষ্ঠানে সম্মেলনে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যের আর্থিক অবস্থা যে ভালো নয় সে কথা জানিয়েছেন, এরপরেও তিনি পশ্চিমবঙ্গের প্রায় প্রতিটি পুজো কমিটিকে এই টাকা দিয়েছেন হলো তো রাজ্যের আর্থিক অবস্থা প্রায় তলানীর মুখে। এই পরিস্থিতিতে সরকারি কর্মীদের বন্ধু হতে চলেছে পেনশন ও গ্রাচুইটি, যার ফলে মাথায় হাত সমস্ত সরকারি কর্মীদের।
ইতিমধ্যেই আমাদের দেশের কেন্দ্রীয় সরকার দেশের বেকার সমস্যার সমাধান ঘটিয়ে দেশের বেকার যুবক যুবতীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়ে দেওয়ার লক্ষ্যে একের পর এক কর্মমুখী প্রকল্প চালু করেছেন। এই মাত্র কিছুদিন আগে দীপাবলির দিন আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী মাননীয় নরেন্দ্র মোদী রোজগার মেলা নামক এক কর্মমুখী মেলার সূচনা করেন। এই রোজগার মেলার মাধ্যমে তিনি দেশের কয়েক লক্ষ বেকারকে কোনো রকম কোনো প্রশিক্ষণ ছাড়া এমনকি কোনো রকম কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা ছাড়াই সরাসরি চাকরিতে নিয়োগ করার প্রতিশ্রুতি দেন। এমনকি সেদিন ওই রোজগার মেলার সূচনা স্থলে দাঁড়িয়েই তিনি ৭৫ হাজার বেকার যুবক যুবতীর হাতে কোনো পরীক্ষা নীরিক্ষা ছাড়াই সরাসরি চাকরিতে নিয়োগ করার নিয়োগ পত্রও তুলে দিয়েছেন। আর এর ফলে ভীষণ ভাবে উপকৃত হয়েছেন আমাদের দেশের বহু বেকার যুবক যুবতী। তারা প্রত্যেকে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন।
এছাড়াও আমাদের দেশের কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে অগ্নিবীর নামক এক কর্মমুখী প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এর প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতি বছর প্রায় ১০ লক্ষ বেকারের কর্মসংস্থান হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকার। এরফলে একদিকে যেমন ভারতীয় সেনাবাহিনীতে সশস্ত্র বাহিনীর সংখ্যা বাড়ায় ভারতকে আরও বেশি করে বহিঃ শত্রুর আক্রমনের হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে, তেমন অন্যদিকে প্রতিবছর যদি ১০ লক্ষ করে বেকারের কর্মসংস্থান হয় তাহলে দেশের বেকারত্বের হারও বেশ অনেক খানি কমবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনার দ্বারাও সারা দেশ জুড়ে অধিক শিক্ষিত স্বল্প শিক্ষিত সকল বেকার যুবক যুবতীকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রশিক্ষণ শেষে তাদের সকলকে সরাসরি চাকরিতে নিয়োগ করার প্রস্তাবও দিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকার। মোটের উপর সব মিলিয়ে আমাদের দেশ ভারতবর্ষকে খুব শীঘ্রই সম্পূর্ণ ভাবে বেকার মুক্ত করার পরিকল্পনা করেছেন আমাদের দেশের কেন্দ্রীয় সরকার।
দেশের বেকার সম্প্রদায়ের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার এতকিছু করছে দেখে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ কর্মচারীরাও তাদের একের পর এক দাবি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের দারস্থ হন। তারা মনে মনে এই ধারণা পোষণ করতে শুরু করেন যে দেশের বেকার সম্প্রদায়ের উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়ে দিতে যখন সরকার এতটা নিঃস্বার্থ ভাবে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তখন দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের হয়ে কাজ করে সরকারকে এতো সব পরিষেবা দিয়ে তারা কেন সরকারের কাছ থেকে তাদের প্রাপ্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হবেন? তাই তারা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তাদের পেনশন বৃদ্ধির দাবি নিয়ে হাজির হন। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক তাদের সেই দাবি এক মূহুর্তের মধ্যে খারিজ করে দেন। এর ফলে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা অত্যন্ত ক্রদ্ধ হয়ে ওঠেন। এই রাগের বশে তারা তখন আর এক ধাপ এগিয়ে তারা তাদের অবসরকালীন ভাতা বাবদ তাদের প্রভিডেন্ট ফান্ডে যে মাসিক ১০০০ টাকা করে পান সেই টাকার পরিমাণ বাড়িয়ে দ্বিগুণ অর্থাৎ ২০০০ টাকা করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
কিন্তু তাদের এই দাবিও ধোপে টিকবে না। কারন কেন্দ্রীয় সরকার তাদের এই অবান্তর দাবি মেনে নেওয়া তো দূরে থাক উল্টে আসন্ন এক অধিবেশনে এই বিষয়টাই স্পষ্ট করে দেবেন বলে জানিয়েছেন যে এবার থেকে যে সব কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা চাকরি করাকালীন নিজেদের কর্তব্যে ফাঁকি দেবেন অর্থাৎ ঠিকঠাক মতো নিজেদের কাজ করবেন না বা চাকরি করাকালীন কোনো অপরাধ মূলক কাজের অপরাধী হিসেবে প্রমানিত হবেন তাদের পেনশন বা প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা বাড়ানো তো দূরে থাক উল্টে অবসর লাভের পর তাদের পেনশন ও প্রভিডেন্ট ফান্ড সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে। আর এই কথা শোনা মাত্রই প্রতি মূহুর্তে আসন্ন বিপদের ভয়ে কম্পিত হয়ে দিন কাটাচ্ছেন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা।