নতুন বছরের শুরুতেই সমগ্ৰ ভারতের বেকার চাকরিপ্রার্থীদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে একটি দুর্দান্ত নিয়োগের ঘোষণা। সারা দেশব্যাপী গড়ে ওঠা কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ বিভিন্ন ছোটো বড়ো দপ্তর মিলিয়ে মোট ৩০ হাজারেরও বেশি শূন্যপদে আবারও নতুন করে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। অল্প কিছু দিনের মধ্যেই এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এইসব দপ্তর গুলিতে কর্মী নিয়োগ করতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। আর এর জন্য অফিসিয়াল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে আবেদন পত্র জমা নেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভারতের অন্তর্গত প্রতিটি রাজ্যের বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সরকারি দপ্তর গুলিতে কর্মী নিয়োগ করা হবে বলে সরকার কর্তৃক জানানো হয়েছে। এক্ষেত্রে চাকরিপ্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতার মাপদন্ড রাখা হয়েছে কমপক্ষে উচ্চমাধ্যমিক পাস। তবে উচ্চশিক্ষিত রাও এখানে সমান ভাবে চাকরির জন্য আবেদনের যোগ্য। সুতরাং ভারতের যে কোনো এলাকা থেকে ন্যুনতম উচ্চমাধ্যমিক পাস থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষিত পর্যন্ত সকল স্থায়ী বেকার চাকরিপ্রার্থীরা এখানে চাকরির জন্য আবেদন করতে পারবেন। চলুন তাহলে সময় নষ্ট না করে কোন কোন দপ্তরে এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কর্মী নিয়োগ করা হবে সেই বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক।
এমনিতেই বেশ কিছু বছর ধরে আমাদের দেশে সরকারি চাকরির হাল খুবই খারাপ। তাই বেশিরভাগ বেকার যুবক যুবতীরা সরকারি চাকরি করার মতো যথেষ্ট শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেই কম বেতনে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তার উপর টানা গত দু’বছর ধরে করোনার জেরে দেশ জুড়ে সরকারি দপ্তর গুলিতে নিয়োগ প্রক্রিয়ার কাজ থমকে ছিল। আর সেই কারণেই খুব স্বাভাবিক ভাবেই দেশের বেকারত্বের গ্ৰাফও দিনে দিনে আরও বেশি উর্ধ্বগামী হচ্ছিল। যা নিয়ে আমাদের রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকার উভয়েই খুব দুশ্চিন্তায় ছিলেন।
আর তাই ২০২২ সালের শুরুর দিক থেকেই পরিস্থিতি আগের তুলনায় বেশ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসতেই কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকার উভয়েই অত্যন্ত তৎপর হয়ে উঠেছেন বেকারত্ব দূরীকরণ অভিযানে। যার উদাহরণ স্বরুপ বলা যায় কেন্দ্রীয় সরকারের রোজগার মেলার সূচনার কথা। গত ২০২২ সালের ২২ শে অক্টোবর আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী দেশের বেকারত্ব দূরীকরণের লক্ষ্যে স্বয়ং এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রোজগার মেলার সূচনা করেন। আর সেই দিনেই তিনি নিজে দেশের কয়েক হাজার বেকার চাকরিপ্রার্থীর হাতে নিয়োগ পত্র তুলে দিয়েছেন এবং সেই সঙ্গে তিনি এই প্রতিশ্রুতি ও দিয়েছেন যে প্রতি বছর এই রোজগার মেলার মাধ্যমে সারা দেশ জুড়ে ১০ হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ মিলবে।
এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের বাড়তে থাকা বেকারত্বের সমস্যার সমাধান করতে আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কর্মদিশা নামক এক নতুন কর্মমুখী প্রকল্প চালু করেছেন। যার মাধ্যমে রাজ্যের নাম সই যোগ্যতা থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষিত পর্যন্ত সকল যোগ্যতার বেকার চাকরিপ্রার্থীরা কর্মসংস্থানের দিশা খুঁজে পাবেন।
তবে শুধু কেন্দ্রীয় সরকার বা রাজ্য সরকার ই নয়। ভারতের বেকারত্ব দূরীকরণ অভিযানে প্রাইভেট সেক্টর গুলির অবদানকে ও অস্বীকার করা যায় না। এই প্রসঙ্গে যে প্রাইভেট সেক্টর এর কথা না বললেই নয় তা হল Axis Bank। আমাদের দেশের স্বনামধন্য প্রাইভেট ব্যাঙ্ক Axis Bank এর নাম আপনারা সকলেই জানেন। এই ব্যাঙ্কের তরফ থেকে প্রতি বছর ১০ হাজার জন স্নাতক পাস বেকার চাকরিপ্রার্থীকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ব্যাঙ্কিং ট্রেনিং করিয়ে ট্রেনিং শেষে নিজেদের ব্যাঙ্কেরই বিভিন্ন ব্রাঞ্চে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়া হয়। যা আমাদের দেশের বেকারত্ব দূরীকরণে কিছুটা হলেও সাহায্য করে।
এবারে আসা যাক আসল কথায়। প্রতিবেদনের একেবারে শুরুতেই আমরা আপনাদের জানিয়েছি যে এই বছরের শুরুতেই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে সারা দেশব্যাপী মোট ৩০ হাজার শূন্যপদে কর্মী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। এবং সেই শূন্যপদ গুলি পূরনের জন্য আবেদন পত্র জমা নেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মূলত কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীনে থাকা একাধিক গুরুত্ব পূর্ণ দপ্তর যেমন- সি.আর.পি.এফ, ওড়িশায় পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ, বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন, রেলওয়ে শিক্ষানবিশ এবং এম.পি. তে পাটোয়ারি পদে কর্মী নিয়োগ করা হবে বলে সরকার কর্তৃক জানানো হয়েছে।
এছাড়াও এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশের কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় গুলিতে বিভিন্ন শূন্যপদে শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী নিয়োগের জন্য ইতিমধ্যেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে আবেদন পত্র জমা নেওয়া শুরু হয়েছে। এবং তা এই জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত চলবে। এগুলি ছাড়াও আরও বেশ কিছু সংখ্যক শূন্যপদে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে কর্মী নিয়োগ করা হবে বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। আর সেগুলি প্রকাশিত হলেই আমরা আমাদের চ্যানেলের মাধ্যমে আপনাদের আপডেট দিয়ে দেব। তাই সকল বেকার চাকরিপ্রার্থীর উদ্দেশ্যে বলা হচ্ছে একটু সজাগ থেকে এইসব নিয়োগের বিষয়ে খবরাখবর রাখতে। যাতে কোনো ভাবেই এই সুবর্ন সুযোগ হাতছাড়া না হয়ে যায়।