ভারতের কৃষক সম্প্রদায়ের জন্য নতুন এক প্রকল্প চালু করে প্রত্যেক কৃষককে এককালীন ৪০,০০০ টাকা টাকা করে অনুদান দেওয়া শুরু করলো কেন্দ্রীয় সরকার। কোনো রকম কোনো যোগ্যতা ছাড়াই ভারতের যে কোনো প্রান্ত থেকে সকল কৃষকেরা এই প্রকল্পের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে নগদ ৪০,০০০ টাকা অনুদান লাভ করার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে শর্ত কেবল একটাই আবেদনকারী কৃষককে ভারতের একজন স্থায়ী নাগরিক হতে হবে। তাহলেই এই প্রকল্পের সুবিধা লাভ করা থেকে তাকে আর কেউ বঞ্চিত করতে পারবেন না। সুতরাং ভারতের প্রতিটি কৃষকের উদ্দ্যেশ্যে বলছি এই সুবর্ন সুযোগ হাতছাড়া না করে যত শীঘ্র সম্ভব আবেদন করে ফেলুন। আর এই প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জানতে হলে আমাদের এই প্রতিবেদনটি একটু মন দিয়ে শেষ পর্যন্ত পড়ে জেনে নিন। নীচে এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রাপ্য সুবিধা, আবেদন পদ্ধতি, প্রকল্পের শর্তাবলী ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হল।
সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা আমাদের এই দেশ ভারতবর্ষ। সৃষ্টির আদিকাল থেকেই ভারতবর্ষ হল একটি কৃষি নির্ভর দেশ। আর এই কথা আমাদের কারোরই অজানা নয়। বছরের পর বছর যুগের পর যুগ ধরে এই কৃষি শিল্পই ভারতীয় অর্থনীতির বুনিয়াদ কে ক্রমশ শক্তিশালী করে তুলছে। ভারতে উৎপাদিত কৃষিপণ্য বিদেশে রপ্তানি করে ভারত প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণ অর্থ লাভ করে যা ভারতীয় অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে তোলার মূল হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে। ভারতে উৎপাদিত কৃষিজ সম্পদ বিদেশে রপ্তানি করে ভারত প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করে। সেই সব কৃষিজ সম্পদ গুলি তো আর নিজে নিজে উৎপাদিত হতে পারে না। কাউকে না কাউকে কষ্ট করে এগুলি উৎপাদন করতে হবে। আর তাই বছরের পর বছর যুগের পর যুগ ধরে রোদে পুড়ে জলে ভিজে ভারতের কৃষক সমাজই
এই সব কৃষিজ সম্পদ উৎপাদন করে চলেছেন আর সেগুলি দেশে বিদেশে বিক্রি করে ভারতীয় অর্থনীতি দিনে দিনে ক্রমশ আরও বেশি চাঙ্গা হয়ে উঠছে।
কিন্তু আমাদের দেশের কৃষকেরা এই যে সারাদিন ধরে রোদে পুড়ে জলে ভিজে এতো পরিশ্রম করে এতো আশা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন করেন অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দূর্যোগ যেমন বন্যা, খরা, ঝড়, বৃষ্টি সহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগের ফলে এবং পশু পাখির কারনে সেগুলি নষ্ট হয়ে যায়। আর তার ফলে উৎপাদিত কৃষিজ পণ্যের বেশ কিছুটা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বারবার বিভিন্ন ধরনের অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় আমাদের দেশের কৃষকদের। তবে এরপর থেকে যাতে এমনটা আর না ঘটে কৃষকেরা ঠিক যতটা পরিমাণ ফসল উৎপাদন করবেন ঠিক ততটা পরিমাণ ফসলই যাতে বিক্রি করে সঠিক পরিমাণ অর্থ উপার্জন করে তাদের পরিশ্রমকে স্বার্থক করতে পারেন সেই কথা চিন্তা করেই আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতের কৃষক সম্প্রদায়ের জন্য নতুন এক প্রকল্প চালু করেছেন যার নাম হল “তারবন্দি প্রকল্প”। এই প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদেরকে তাদের নিজ নিজ জমি প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও পশু পাখির আক্রমনের হাত থেকে রক্ষা করতে পুরো জমি তারবন্দি করার জন্য মাথাপিছু ৪০,০০০ টাকা করে পর্যন্ত অনুদান দেওয়া হয়।
“তারবন্দি যোজনা” প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত শর্তাবলী:-
“তারবন্দি যোজনা” প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য আবেদন করতে হলে আবেদনকারী কৃষকদেরকে বেশ কিছু শর্ত পালন করতে হবে সেগুলি হল-
১) এক্ষেত্রে আবেদনকারী কৃষককে ভারতের একজন স্থায়ী নাগরিক হতে হবে সেইসঙ্গে তিনি বর্তমানে ভারতের যে রাজ্যে বসবাস করে এই যোজনার জন্য আবেদন করছেন সেই রাজ্যের একজন স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। তবেই তিনি এই প্রকল্পের সুবিধা লাভ করতে পারবেন নচেৎ নয়।
২) এই প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে হলে আবেদনকারী কৃষকের নিজের নামে একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। কারন কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেওয়া অর্থ সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করে দেওয়া হয়।
৩) এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য আবেদন করতে হলে আবেদনকারী কৃষকের কমপক্ষে নিজস্ব ০.৫ হেক্টর জমি থাকতে হবে। তবেই তিনি এই প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে পারবেন নচেৎ নয়।
৪) এক্ষেত্রে আবেদনকারী কৃষক যদি আগে থেকেই এই ধরনের কোনো যোজনার আওতায় থেকে তার সুবিধা লাভ করে থাকেন তাহলে তিনি এক্ষেত্রে আবেদনের জন্য যোগ্য নন।
৫) আবেদনকারীর বয়স অবশ্যই ১৮ বছরের উর্ধ্বে হতে হবে।
“তারবন্দি যোজনার” মাধ্যমে প্রাপ্য সুবিধা:-
আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্যোগে ভারতের কৃষক গোষ্ঠীর জন্য চালু করা এই প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদেরকে তাদের নিজ নিজ জমি প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও পশু পাখির আক্রমনের হাত থেকে রক্ষা করতে পুরো জমি তারবন্দি করার জন্য মাথাপিছু ৪০,০০০ টাকা করে পর্যন্ত অনুদান দেওয়া হয়।
“তারবন্দি যোজনা” প্রকল্পের আবেদন পদ্ধতি:-
এই প্রকল্পের আওতায় নাম নথিভুক্ত করে এই প্রকল্পের সুবিধা লাভ করার জন্য আবেদন করতে হলে কৃষকদেরকে তাদের নিকটবর্তী যে কোনো কৃষি অফিসে গিয়ে সেখানকার অধিকারীকদের থেকে এই প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে সবকিছু জেনে নিয়ে সেখান থেকেই আবেদন করতে হবে।
প্রয়োজনীয় প্রমান পত্র:-
“তারবন্দি যোজনা” প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে হলে আবেদনকারীকে আবেদন করার সময় যে সব প্রয়োজনীয় প্রমান পত্র গুলি সহ আবেদন করতে হবে সেগুলি হল-
১) ফটো আইডি প্রুফ হিসেবে আধার কার্ড বা ভোটার কার্ড।
২) ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমান পত্র হিসেবে আধার কার্ড।
৩) আবেদনকারী বর্তমানে যে রাজ্যে বসবাস করছেন সেই রাজ্যের একজন স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার প্রমাণ পত্র হিসেবে ভোটার কার্ড।
৪) আবেদনকারীর নিজস্ব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের প্রমান পত্র।
৫) আবেদনকারীর নিজস্ব জমির দলিল।
৬) রিসেন্ট তোলা রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ফটো।
৭) একটি বৈধ মোবাইল নাম্বার।
কতদিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে?
“তারবন্দি যোজনা” প্রকল্পের জন্য আবেদন প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে এবং বর্তমানে তা চলছে। এবং এর কোনো রকম শেষ সময় সীমা ধার্য্য করা হয়নি। তাই আপনারা আপনাদের সুবিধা অনুযায়ী যেদিন খুশি এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন।