সারা দেশের প্রতিটি রেশন কার্ড হোল্ডার দের জন্য বিরাট বড়ো সুখবর। ফের কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে দেশের প্রতিটি রাজ্যের সেই সকল নাগরিক যাদের রেশন কার্ড রয়েছে তাদের সকলকে আগামী নতুন বছরের জানুয়ারি মাস থেকে আবারও নতুন করে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে রেশন দ্রব্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় সরকার। সম্প্রতি কিছুদিন ধরে ফের করোনা ভাইরাসের মতো ভয়ঙ্কর মহামারীর নতুন ওয়েভ ওমিক্রন বি এফ সেভেন সারা দেশ তথা সারা বিশ্ব জুড়ে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। তাই সারা দেশের প্রতিটি নাগরিকের খাদ্য নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করে করোনারএই নতুন ওয়েভে আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে তাদেরকে রক্ষা করার জন্য সামনের মাস অর্থাৎ জানুয়ারি মাস থেকে সারা দেশ জুড়ে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যেমন চাল, ডাল, আটা, ছোলা ইত্যাদি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। হঠাৎই অযাচিত ভাবে করোনার এই নতুন ওয়েভ চলে আসায় তড়িঘড়ি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সভার এক বৈঠক আয়োজন করে সেই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্বয়ং এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছেন।
আমরা সকলেই জানি যে ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে প্রথমবার করোনার প্রথম ঢেউ কোভিড-19 বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ভারতেও ছড়িয়ে পড়েছিল। সেই মতাবস্থায় দেশের সরকারি কর্মীদের বাদে সকল বেসরকারি কর্মী ও সাধারণ খেটে খাওয়া শ্রমিক শ্রেণীর মানুষদের বেশিরভাগেরই চাকরি চলে যায়। ফলে সেই পরিস্থিতিতে সারা দেশ জুড়ে দেখা দিয়েছিল অন্নাভাব। আর ঠিক তখনই আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী দেশের সেই সকল কর্মহীন মানুষদের অন্নাভাব দূর করতে চালু করেছিলেন ফ্রি তে রেশন বন্টন ব্যাবস্থা। এবং তখন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত দেশের ৮০ কোটি মানুষকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে রেশন দ্রব্য দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এতে কেন্দ্রীয় সরকারের মোট খরচ হয়েছে ১ লক্ষ ৮০ হাজার কোটি টাকা। এমনটাই সেদিন মন্ত্রী সভার বৈঠকে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল।
এর উপরে আবারও নতুন করে করোনার নতুন ওয়েভ ওমিক্রন বি এফ সেভেন সারা দেশ জুড়ে হঠাৎ ই ছড়িয়ে পড়ায় কেন্দ্রীয় সরকার আগামী ১ বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত এই ফ্রি তে রেশনে চাল, ডাল, আটা দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাতে করে আরও ২ লক্ষ কোটি টাকা খরচের ভাড় বহন করতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে। কিন্তু তাতেও আমাদের দেশের কেন্দ্রীয় সরকার এই রুপ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে এই বিপুল অংকের টাকা খরচের কথা একবারও না ভেবে দেশের গরীব জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে তৎপর হয়ে উঠেছেন।
তবে শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারই নয় এই বিষয়ে আমাদের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অবদান ও যে কোনো অংশে কম নেই তা বলাই বাহুল্য। প্রথমবার করোনা আসার সময় থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের রাজ্য সরকার ও সমান তালে তাল মিলিয়ে রাজ্যের প্রতিটি জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে খাদ্যসাথী নামক প্রকল্পের মাধ্যমে বিনামূল্যে রেশন দ্রব্য দেওয়া শুরু করেছেন এবং আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কথা দিয়েছিলেন যে তিনি যদি ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে আবারও তৃতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর পদ লাভ করেন তাহলে তিনি যতদিন বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকবেন ততদিন পর্যন্ত রাজ্যের সকল জনগণ যাদের রেশন কার্ড আছে তাদের সকলকে বিনামূল্যে রেশন দ্রব্য প্রদান করবেন। অর্থাৎ সবমিলিয়ে এটাই বোঝা যাচ্ছে যে আমাদের রাজ্য তথা সারা দেশকে করোনা নামক ভয়ঙ্কর মহামারীর প্রকোপ থেকে বাঁচাতে মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী উভয়েই যৌথ ভাবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তবে শেষ পর্যন্ত তাদের চেষ্টার সঙ্গে লড়াই করে করোনার এই নতুন ঢেউ ওমিক্রন বি এফ সেভেন ভারতে কতটা প্রভাব বিস্তার করতে পারবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।