রাজ্যের প্রতিটি ব্যক্তিকে মাথাপিছু 10 হাজার টাকা করে দিচ্ছে রাজ্য সরকার, আবেদন করলেই টাকা পাবেন | WB Govt New Prakalpa 2023

By bengalpravakar.com

Published on:

 

বিশেষ এক প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যবাসীদের প্রতি বছর ১০,০০০ টাকা করে অনুদান দিচ্ছে রাজ্য সরকার। কিন্তু কি ধরনের প্রকল্পের মাধ্যমে? কি নাম সেই প্রকল্পের? কিভাবে আবেদন করতে হবে এবং কত দিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে? এই সবই ভাবছেন নিশ্চই, চিন্তা নেই এই সব কিছুর বিষয়ে খুঁটিনাটি তথ্য আপনাদের পরিস্কার ভাবে বুঝিয়ে দিতে রইল আমাদের আজকের এই প্রতিবেদন। সুতরাং একটু ধৈর্য ধরে মন দিয়ে শেষ পর্যন্ত এই প্রতিবেদনটি পড়ে এই প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জেনে নিন।

      সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা আমাদের এই দেশ ভারতবর্ষ। সুপ্রাচীন কাল থেকেই আমরা সবাই জানি যে ভারতবর্ষ হল মূলত কৃষি নির্ভর দেশ। আর এই কৃষিই হল ভারতের অর্থনীতির মূল স্তম্ভ। আর সেই লোভেই ব্রিটিশরা দীর্ঘ ২০০ বছর ভারতে শাসন চালিয়েছিলেন। কিন্তু ভারতীয় কৃষির উন্নতি তো আর এমনি এমনি হয় নি, এর পেছনে সম্পূর্ণ অবদান রয়েছে ভারতের কৃষক সম্প্রদায়ের। তারাই বছরের পর বছর, মাসের পর মাস, দিনের পর দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে ফসল উৎপাদন করেন। আর সেই ফসল রপ্তানি করেই ভারত প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণ অর্থ আয় করে যা ভারতীয় অর্থনীতিকে অনেক খানি শক্তিশালী করে তুলতে সাহায্য করে।

      কৃষক সমাজ তো নাহলে দিন রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে ফসল উৎপাদন করে ভারতীয় অর্থনীতিকে যুগের পর যুগ ধরে শক্তিশালী করে আসছেন কিন্তু তাদের নিজস্ব অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি কে ঘটাবে? তারা তো দীর্ঘদিন ধরে যে তিমিরে পড়ে ছিলেন সেই তিমিরেই পড়ে আছেন। আগেও তারা যেভাবে কষ্ট করে দুঃখ দুর্দশার মধ্যে জীবন যাপন করতেন এখনও তাই করছেন। আর সেই কারণেই তাদের এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিয়ে তাদের আর্থিক অবস্থার একটু হলেও উন্নতি ঘটানোর লক্ষ্যে আমাদের কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই “কৃষক সন্মান নিধি” বলে একটি প্রকল্প চালু করেছেন। যার মাধ্যমে আমাদের দেশের প্রতিটি কৃষককে বার্ষিক ৬ হাজার টাকা করে ভাতা প্রদান করা হয়। এছাড়াও যাতে তাদের চাষ বাসের কাজে কোনো টাকা পয়সার অভাব না হয় সেই জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে দেশের কৃষকদের অত্যন্ত স্বল্প সুদে কৃষি ভিত্তিক ঋন দানেরও ব্যাবস্থা করা হয়েছে। 

     এছাড়াও ভারতীয় কৃষক সমাজের ভবিষ্যত সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে “মানধন যোজনা” নামক এক প্রকল্পের মাধ্যমে প্রত্যেক কৃষককে প্রতি মাসে ৩ হাজার টাকা করে মাসিক পেনশন দেওয়া শুরু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। যাতে তাদের বয়স যখন ৬০ বছর বা তার উর্ধ্বে হবে তখন যখন তারা আর পরিশ্রম করতে পারবেন না, তখন যেন তারা এই পেনশনের টাকায় নিজেদের সংসার চালাতে পারেন।

      আর ঠিক সেই কারনেই কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি আমাদের রাজ্য সরকারও বাংলার দরিদ্র কৃষক সম্প্রদায়ের সুবিধার জন্য ২০১৯ সাল থেকে নতুন এক প্রকল্প চালু করেছেন যার নাম হল “কৃষক বন্ধু”। এই জনমুখী প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের প্রতিটি দরিদ্র কৃষককে প্রতি বছর ১০,০০০ টাকা করে অনুদান প্রদান করে রাজ্য সরকার। এই প্রকল্পের সঙ্গে হয়তো আমাদের রাজ্যের অনেক দরিদ্র শ্রেণীর কৃষকেরাই পরিচিত। অনেকে হয়তো বা ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পের সুবিধাও ভোগ করছেন। তবে যারা এখনও পর্যন্ত এই প্রকল্পের বিষয়ে অবগত নন বা জানলেও সেভাবে বিশদে কিছু জানেন না তাদের জন্য আমাদের আজকের এই প্রতিবেদনটি খুবই উপকারী হতে চলেছে বলে আমাদের বিশ্বাস। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে এই “কৃষক বন্ধু” প্রকল্পের এর বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জেনে নেওয়া যাক।

“কৃষক বন্ধু” প্রকল্প থেকে কি কি সুবিধা পাওয়া যায়?

এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলার দরিদ্র শ্রেণীর কৃষকদের যে যে সুবিধা গুলি দেওয়া হয় সেগুলি হল-

১) “কৃষক বন্ধু” প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের প্রতিটি দরিদ্র কৃষককে প্রতি বছর ১০,০০০ টাকা করে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে অনুদান হিসেবে দেওয়া হয়।

২) এই প্রকল্পে আবেদন করার পরই  আবেদনকারীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ২,০০০ টাকা রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জমা করা হয়। যাতে আবেদনকারী এই বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেন যে তার করা আবেদন পত্রটি রাজ্য সরকার দ্বারা গৃহীত হয়েছে।

৩) এই প্রকল্পের আওতায় থাকা কোনো কৃষকের যদি মৃত্যু হয় তাহলে তার মৃত্যুর পর তার পরিবারকে এককালীন ২ লক্ষ টাকার বীমা প্রদান করা হয় রাজ্য সরকারের তরফ থেকে।

৪) পশ্চিমবঙ্গের যে কোনো জায়গার দরিদ্র শ্রেণীর কৃষকরা এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

এই প্রকল্পে আবেদন করার জন্য কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে?

“কৃষক বন্ধু” প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য আবেদন করতে হলে যে যে যোগ্যতা গুলি থাকলে তবেই আবেদন করা যাবে সেগুলি হল-

১) আবেদনকারী কৃষককে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের একজন স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।

২) এক্ষেত্রে আবেদনকারী কৃষকের বয়স হতে হবে ১৮-৬০ বছরের মধ্যে।

৩) আবেদনকারী কৃষকের নিজের নামে অবশ্যই একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে।

৪) আবেদনকারী কৃষকের চাষবাস করার মতো জমি থাকতে হবে এবং কৃষককে সেই জমিতে বর্তমানে চাষ আবাদের কাজও করে থাকতে হবে।

কৃষক বন্ধু” প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য কিভাবে আবেদন করতে হবে?

এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য কৃষক বন্ধু প্রকল্পের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট https://krishakbandhu.net অথবা অফিসিয়াল ই-মেইল আইডি krishak. bandhu@ingreens.com এর মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। তার জন্য যা যা করতে হবে সেগুলি হল-

১) প্রথমে অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে।

২) তারপর সেখানে প্রয়োজন মতো তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।

৩) রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলে যাবতীয় প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস স্ক্যান করে আপলোড করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করলেই অ্যাপ্লিকেশান হয়ে যাবে।

     অন্যদিকে ই-মেইল এর মাধ্যমে আবেদন করতে হলে-

১) প্রথমে অনলাইন থেকে এই প্রকল্পের আবেদন পত্রের PDF এর একটি প্রিন্ট আউট বের করে নিয়ে সেখানে প্রয়োজন মতো তথ্য দিয়ে পূরন করে ফেলতে হবে।

২) এরপর সমস্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সহ এই পূরণ করা আবেদন পত্র একসঙ্গে করে একটি ফাইল তৈরি করে উপরিউক্ত ই-মেইল আইডির মাধ্যমে পাঠিয়ে দিতে পারলেই আবেদন প্রক্রিয়া শেষ।

কি কি প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস জমা দিতে হবে?

আবেদন করার সময় যে সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলি স্ক্যান করে বা ফাইল তৈরি করে জমা দিতে হবে সেগুলি হল-

১) আধার কার্ড।

২) ভোটার কার্ড।

৩) ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের প্রথম পাতা।

৪) জমির দলিল।

৫) রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ফটো।

কিভাবে যোগ্য প্রার্থী বাছাই করা হবে?

আবেদন প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর সমস্ত কিছু প্রমান পত্র খতিয়ে দেখে যারা যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন তাদেরকে এই প্রকল্পের অন্তর্গত যাবতীয় সুবিধা গুলি প্রদান করা হবে।

কতদিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে?

“কৃষক বন্ধু” প্রকল্পের আবেদন প্রক্রিয়া বর্তমানে চলছে। এবং এর কোনো রকম শেষ সময় সীমা ধার্য্য করা হয়নি। অর্থাৎ আপনারা আপনাদের সুবিধা অনুযায়ী যেদিন খুশি আবেদন করতে পারবেন।


MORE JOB NEWS: CLICK HERE

চাকরির সম্বন্ধীয় ও নতুন নতুন এই ধরনের প্রকল্প সম্বন্ধীয় আরো বিস্তারিত খবরা খবর পেতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল যুক্ত হন।
TELRGRAM CHANNEL:  CLICK HERE

Leave a Comment