আপনি কি শুধুই মাধ্যমিক পাস একজন বেকার চাকরিপ্রার্থী? কোনো উচ্চতর ডিগ্ৰি না থাকার কারণে অনেকদিন ধরে একটা স্থায়ী ও সন্মানীয় পদে সরকারি চাকরির খোঁজ করছেন কিন্তু কোনো ভাবেই খোঁজ মিলছে না? আর মিলবেই বা কি করে? দিনে দিনে সরকারি চাকরিতে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতার মান এতটাই উচ্চ হয়ে যাচ্ছে যার ফলে আমাদের দেশে এখনও পর্যন্ত এমন অনেক স্বল্প শিক্ষিত বেকার যুবক যুবতী আছেন যারা এখন আর কোনো সরকারি চাকরির জন্য আবেদন করতে পারেন না। অন্যদিকে আবার প্রাইভেট কোম্পানি গুলিতেও কোনো প্রশিক্ষণ ভিত্তিক কোর্সের সার্টিফিকেট ছাড়া চাকরিতে নিয়োগ করা হয় না। এর ফলে আমাদের দেশের দরিদ্র স্বল্প শিক্ষিত বেকার চাকরিপ্রার্থীরা না পাচ্ছেন সরকারি চাকরি আর না পাচ্ছেন বেসরকারি চাকরি । এর ফলে তারা বেকারত্বের জ্বালায় এতটাই জর্জরিত হয়ে পড়ছেন যে তারা তাদের জীবনের বাঁচার রসদ টুকু হারিয়ে ফেলেছেন। তবে এতদিন পর মনে হচ্ছে তারা সেই বাঁচার রসদ আবার ফিরে পাবেন। তাদের সমস্ত দুশ্চিন্তা ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যাবে। আর এমনটা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে কারন কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ ভারতীয় নৌবাহিনী তরফ থেকে কয়েক হাজার শূন্যপদে প্রচুর সংখ্যক কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। সারা ভারতের যে কোনো প্রান্তের মাধ্যমিক পাস বেকার চাকরিপ্রার্থী এখানে চাকরির জন্য আবেদন করতে পারবেন। এবারে এই নিয়োগের বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক ।
শূন্যপদের নাম, শিক্ষাগত যোগ্যতা ও বয়স সীমা:-
ভারতীয় নৌবাহিনীতে চাকরির জন্য আবেদনকারী প্রার্থীদের সমস্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া গুলি সম্পূর্ণ হওয়ার পর যারা যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন তাদের Syrang of Lascars পদে নিযুক্ত করা হবে। এবং তার জন্য আবেদনকারীর শিক্ষাগত যোগ্যতা হতে হবে যে কোনো সরকার স্বীকৃত বোর্ড থেকে নুন্যতম মাধ্যমিক পাস। এবং সেই সঙ্গে সরাকার অনুমোদিত Syrang কোর্সের সার্টিফিকেট থাকাটাও আবশ্যিক। এছাড়াও আবেদনকারীর যে কোনো সরকার স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানে কমকরে ২ বছর Syrang-in-charge পদে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এই পদের জন্য আবেদনকারীর নির্ধারিত বয়স সীমা হল ১৮-২৫ বছর। তবে সরকারি নিয়মানুযায়ী SC রা ৫ বছর, OBC রা ৩ বছর এবং PwBD রা ১০-১৫ বছর বয়স পর্যন্ত বয়সের ছাড় পাবেন।
আবেদন করার পদ্ধতি:- কেন্দ্রীয় সরকার অধীনস্থ ভারতীয় নৌবাহিনীতে অন্যান্য দপ্তরের মতো অনলাইন আবেদনের ব্যাবস্থা না থাকায় আপনাকে আবেদন করতে হলে অফলাইনের মাধ্যমে অর্থাৎ পোস্ট অফিসের দ্বারা আবেদন পত্র জমা করতে হবে। এবং যে ভাবে করতে হবে সেগুলি হল-
১) সবার প্রথমে আপনাকে আপনার মোবাইল ফোনের বা ল্যাপটপের মাধ্যমে আমাদের টেলিগ্ৰাম চ্যানেলের মে বিজ্ঞাপন টি আপনি পড়ছেন তার নীচের দিকে একটা অফিসিয়াল নোটিফিকেশন আছে সেটিকে আগে ডাউনলোড করতে হবে।
২) তারপর সেই নোটিফিকেশন মধ্যে দেখবেন এই দপ্তরে কর্মী নিয়োগের একটি আবেদন পত্র দেখতে পাবেন সেই আবেদন পত্রের একটি সাদা A4 সাইজ পেপারে একটি প্রিন্ট আউট বের করে নিতে হবে।
৩) এরপর সেটিকে আপনার নিজের যাবতীয় তথ্য অর্থাৎ নিজের নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম, অভিভাবকের নাম, শিক্ষাগত যোগ্যতা, জেন্ডার, বয়স, ঠিকানা, আধার নম্বর, একটি বৈধ ইমেল আইডি ও ফোন নাম্বার ইত্যাদি লিখে ফিলাপ করে ফেলুন।
৪) এরপর অফিসিয়াল নোটিফিকেশন উল্লেখিত মাপ অনুযায়ী একটি পাসপোর্ট সাইজের ফটো ফর্মের নির্দিষ্ট স্থানে চিটিয়ে দিন এবং সেই সঙ্গে সিগনেচারের জন্য যে জায়গা দেওয়া আছে সেখানে একটি সিগনেচার করে দিন।
৫) সবশেষে আপনার নিজের যাবতীয় প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলির এক কপি করে জেরক্স সেলফ অ্যাটেস্টেড করে ফর্মের সঙ্গে পিন দিয়ে আটকে একটি খামের ভেতর ঢুকিয়ে খামের উপর ঠিকানা লিখে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে স্পীড পোস্টের মাধ্যমে নির্দিষ্ট ঠিকানায় পৌঁছে দিন।
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস:-
আবেদন পত্র নিজের যাবতীয় প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে ফিলাপ করে খামে ভরার সময় এই আবেদন পত্রের সঙ্গে যে সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলি যুক্ত করতে হবে সেগুলি হল-
১) আবেদন কারীর বয়সের প্রমানপত্র হিসেবে মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড বা বার্থ সার্টিফিকেট এর জেরক্স সেলফ অ্যাটেস্টেড করা।
২) দেশের নাগরিকত্বের প্রমান হিসেবে আধার কার্ডের জেরক্স সেলফ অ্যাটেস্টেড করা।
৩) আবেদন কারীর শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণ পত্র হিসেবে মাধ্যমিকের মার্কসীট সহ আরও অন্যান্য সব পরীক্ষার মার্কসীট ও সার্টিফিকেট এর জেরক্স সেলফ অ্যাটেস্টেড করা।
৪) কাস্ট সার্টিফিকেট এর জেরক্স সেলফ অ্যাটেস্টেড করা (যদি থাকে)।
৫) আবেদন কারীর নিজস্ব দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ফটো সেলফ অ্যাটেস্টেড করা।
প্রার্থী বাছাই পদ্ধতি:-
এই দপ্তরে আবেদনকারী চাকরিপ্রার্থীদের আবেদন পত্র জমা পড়া শেষ হওয়ার পর যদি দেখা যায় যে নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম করে আবেদন পত্র জমা পড়েছে তাহলে আবেদনকারী চাকরিপ্রার্থীদের অ্যাকাডেমিক এক্সামিনেশনে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে একটি শর্টলিস্ট তৈরি করা হবে। এই লিস্ট আপনারা এই দপ্তরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখতে পাবেন। এই লিস্টে যাদের নাম থাকবে তাদের প্রথমে একটি ১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে। এই পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হবেন তাদের একটি মেডিকেল টেস্ট এবং স্কিল টেস্টের জন্য ডাকা হবে। এখানেও যারা উত্তীর্ণ হবেন তাদের ই-মেইল করে ইন্টারভিউ লেটার পাঠিয়ে ইন্টারভিউ ও ডকুমেন্টস ভেরিফিকেশন এর জন্য ডাকা হবে। শেষ মেষ এই সব কিছুতে যারা উত্তীর্ণ হবেন তাদের সরাসরি চাকরিতে নিয়োগ করা হবে।
আবেদন করার সময় সীমা:-
ভারতীয় নৌবাহিনীর শূন্যপদ গুলিতে কর্মী নিয়োগের জন্য আবেদন পত্র জমা নেওয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে এবং এই আবেদন প্রক্রিয়া চলবে আগামী ৬ ই নভেম্বর ২০২২ পর্যন্ত। তাই আর সময় নষ্ট না করে দ্রুত আবেদন করে ফেলুন।