বছরের শুরুতেই সকল কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের জন্য দুর্দান্ত সুখবর। কিছু দিনের মধ্যেই একটি নয় দুটি নয় একসঙ্গে মোট তিনটি সুখবর পেতে চলেছেন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা। আর মাত্র কিছুদিনের অপেক্ষা। তার পরেই বিরাট প্রাপ্তি যোগ ঘটতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ কর্মচারীদের। সম্প্রতি শুরু হওয়া সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের এক মন্ত্রী সভার বৈঠকে অষ্টম পে কমিশন কার্যকর করে সরকারি কর্মীদের বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় সরকার। এই বর্ধিত বেতন বছরের শুরুতেই সরকারি কর্মীদের দিতে না পারলেও যত শীঘ্র সম্ভব মিটিয়ে দেবে সরকার। সূত্র মারফত এমনটাই জানা গিয়েছে। সুতরাং এই অষ্টম পে কমিশনের সুবিধা লাভ করতে হলে সরকারি কর্মীদের আর মাত্র কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। আগামী কিছুদিনের মধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের ২০২২-২০২৩ বর্ষের বাজেট পেশ হবে আর ঠিক তার পরেই কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের অ্যাকাউন্টে এই বর্ধিত পরিমাণ বেতনের টাকা জমা পড়া শুরু হবে।
তবে এখানেই শেষ নয়, ২০২২-২০২৩ বর্ষের বাজেট পেশ হওয়ার পর শুধু যে অষ্টম পে কমিশন কার্যকর করে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি করা হবে তা নয়। সেই সঙ্গে করোনা চলাকালীন দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি খুবই খারাপ থাকার কারণে কেন্দ্রীয় সরকার তার অধীনস্থ কর্মচারী ও পেনশন ভোগীদের তাদের প্রাপ্য ১৮ মাসের যে মহার্ঘ্য ভাতা দিতে পারেনি তাও সরকার তাদেরকে আসন্ন নতুন বছরের শুরুতেই একসাথে পুরোটা মিটিয়ে দেবে বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে।
এছাড়াও এই সবকিছুর পাশাপাশি আরও একটি সুখবর হল এইটাই যে নতুন বছরে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের ফিটমেন্ট ফ্যাক্টরও মহার্ঘ্য ভাতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে চলেছে। এই অষ্টম পে কমিশন কার্যকরী হলে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ ৬৮ লক্ষ কর্মী ও ৫২ লক্ষ পেনশন ভোগীরা বর্তমানে সপ্তম পে কমিশনের আওতায় থাকা ৩৮% মহার্ঘ্য ভাতা (DA) এর যে সুবিধা ভোগ করছেন তার উপর আরও ৪% অধিক হারে অর্থাৎ মোট ৪২% মহার্ঘ্য ভাতার সুবিধা পাবেন। আর এমনটা হলে দেশের প্রতিটি সর্বনিম্ন বেতন প্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের বর্তমানে পাওয়া বেতনের উপর ৭২০ টাকা এবং সর্বোচ্চ বেতন প্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের বর্তমানে পাওয়া বেতনের উপর ২২৭৬ টাকা করে বাড়বে। ফলে এখন সকল প্রকার কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের ন্যুনতম বেতনের স্কেল যেটা রয়েছে অর্থাৎ ১৮ হাজার এক নিমেষে তার মাত্রা বেড়ে দাঁড়াবে ২৬ হাজারে।
কেন্দ্রীয় সরকার সাধারণত তার অধীনস্থ কর্মচারীদের বছরে দু’বার একবার বছরের শুরুতেই জানুয়ারি মাসে এবং আর একবার বছরের মাঝামাঝি সময়ে অর্থাৎ জুলাই মাসে বছরে মোট এই দুবার ডি.এ দিয়ে থাকে। কিন্তু গত দু’বছর ধরে করোনার জেরে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এতটাই দুর্বিসহ হয়ে পড়েছিল যে কেন্দ্রীয় সরকার তার অধীনস্থ কর্মীদের তাদের প্রাপ্য ডি.এ দিতে ব্যার্থ হয়েছে। আর তা নিয়ে এতদিন যথেষ্ট অস্বস্তিতে ছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তাই বর্তমানে পরিস্থিতি আগের তুলনায় অনেকটাই স্থিতিশীল হতে না হতেই কেন্দ্রীয় সরকার তার অধীনস্থ কর্মীদের সকল পাওনা গন্ডা মিটিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই স্বাভাবিক ভাবেই বর্তমান অগ্নিমূল্যের বাজারে যেভাবে প্রতিটি দেশবাসীর নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড় হয়েছে সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে দেওয়া একসঙ্গে এই তিন তিনটি সুখবর যে প্রতিটি কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের জীবনে আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপের আলো হয়ে দেখা দেবে তা বলাই বাহুল্য।
তবে তার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের আর মাত্র কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। কিছুদিনের মধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের ২০২২-২০২৩ বর্ষের বাজেট পেশ হবে। আর সেই বাজেটের ওপর ভিত্তি করেই কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের প্রাপ্য বকেয়া পাওনা তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা করা শুরু করবে কেন্দ্রীয় সরকার। সুতরাং আর কিছু দিনের মধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের ভাগ্যের চাকা এক লহমায় অনেকখানি ঘুরে যেতে চলেছে সেই বিষয়ে কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকের তরফ থেকে আশ্বাস মিলেছে।