আমাদের রাজ্যে এখনও পর্যন্ত এমন বহু দরিদ্র পরিবারের মেধাবী ছাত্রীরা বসবাস করে যাদের অনেক দূর পর্যন্ত লেখাপড়া করে মানুষের মতো মানুষ হয়ে ওঠে চাকরি বাকরি করার ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও পরিবারের আর্থিক দুরাবস্থার কারণে তাদের মা বাবারা তাদেরকে মাধ্যমিক পাস করার পরেই যেমন তেমন করে বিবাহ দিয়ে দেন। তার ফলে লেখাপড়া শিখে উচ্চশিক্ষিত হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর স্বপ্নটা তাদের অচিরেই শেষ হয়ে যায়। আর সেই কারণেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আমাদের রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সব মেধাবী দরিদ্র পরিবারের ছাত্রীদের লেখাপড়ার বিষয়ে সাহায্য করার জন্য কন্যাশ্রী নামে একটি মহান প্রকল্প চালু করেছেন তার সঙ্গে আশা করি আপনারা সকলেই পরিচিত। এই কন্যাশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে পাওয়া অর্থ দিয়ে ইতিমধ্যেই আমাদের রাজ্যের বহু দরিদ্র মেধাবী ছাত্রী লেখাপড়া শিখে নিজের পায়ে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে। আর সেই কারণেই ভবিষ্যতে এই প্রকল্পকে আরও বেশি উন্নত ও শক্তিশালী করে তুলতে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে রাজ্যের বেশ কিছু জেলায় এই কন্যাশ্রী প্রকল্পে বেশ কিছু সংখ্যক শূন্যপদে কর্মী নিয়োগ করার জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। সারা পশ্চিমবঙ্গের যে কোনো জেলা থেকে নারী পুরুষ নির্বিশেষে সকল শিক্ষিত বেকার চাকরিপ্রার্থীরা এখানে চাকরির জন্য আবেদন করতে পারবেন। নীচে এই নিয়োগের বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হল।
আবেদন করার নিয়মাবলী:-
এখানে চাকরির জন্য আবেদন করতে ইচ্ছুক ও যোগ্য প্রার্থীদেরকে সম্পূর্ণ ভাবে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে এবং তার জন্য যা যা করতে হবে সেগুলি হল-
১) প্রথমে google search box এ এই নিয়োগের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট purulia.gov.in লিখে এন্টার দিন।
২) এরপর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে সেখানে রেজিস্ট্রেশন লিঙ্কে ক্লিক করে প্রথম রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে।
৩) রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলে সরকারের তরফ থেকে একটি User Id ও Password দেওয়া হবে সেটি দিয়ে Login করতে হবে।
৪) এরপর অ্যাপ্লিকেশান ফর্মের আকারে একটি নতুন window খুলবে।
৫) এরপর সেখানে আপনার নিজের নাম, অভিভাবকের নাম, শিক্ষাগত যোগ্যতা, বয়স, জেন্ডার, জন্ম তারিখ, ঠিকানা, আধার নম্বর, একটি বৈধ ইমেল আইডি ও ফোন নাম্বার ইত্যাদি দিয়ে ফর্ম টিকে ফিলাপ করে ফেলতে হবে।
৬) এরপর এক কপি রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ফটো, আগে থেকে করে রাখা একটি সিগনেচার, সমস্ত শিক্ষাগত যোগ্যতার ডকুমেন্টস সহ অন্যান্য সব ডকুমেন্টস এর এক এক করে ছবি তুলে স্ক্যান করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করলেই অ্যাপ্লিকেশান Done।
৭) সবশেষে এই অ্যাপ্লিকেশান ফর্মের একটি প্রিন্ট আউট বের করে নিজেদের কাছে রেখে দেবেন।
প্রয়োজনীয় নথীপত্র:-
আবেদন পত্রের সঙ্গে যে সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলি যুক্ত করে সাবমিট করতে হবে সেগুলি হল-
১) বয়সের প্রমানপত্র হিসেবে মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড বা বার্থ সার্টিফিকেট স্ক্যান করা।
২) ফটো আইডি প্রুফ হিসেবে আধার কার্ড/ভোটার কার্ড/প্যান কার্ড/ড্রাইভিং লাইসেন্স স্ক্যান করা।
৩) মাধ্যমিক থেকে শুরু করে স্নাতক ডিগ্রি পর্যন্ত সকল শিক্ষাগত যোগ্যতার মার্কসীট ও সার্টিফিকেট স্ক্যান করা।
৪) কাস্ট সার্টিফিকেট যদি থাকে তাহলে স্ক্যান করা।
৫) কোনো ওয়ার্ক এক্সপিরিয়েন্স সার্টিফিকেট যদি থাকে তাহলে স্ক্যান করা।
৬) কম্পিউটার কোর্সের সার্টিফিকেট স্ক্যান করা।
৭) এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ফটো স্ক্যান করা।
শূন্যপদের নাম:-
রাজ্য সরকারের উদ্যোগে চালু হওয়া কন্যাশ্রী প্রকল্পের যাবতীয় কাজ পরিচালনা করার জন্য রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলার ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট অফিসে অ্যাকাউন্ট্যান্ট পদে কর্মী নিয়োগ করা হবে বলে সরকার কর্তৃক অফিসিয়াল নোটিফিকেশন প্রকাশ করে জানানো হয়েছে।
শিক্ষাগত যোগ্যতা, বয়স ও বেতনের পরিমাণ:-
কন্যশ্রী প্রকল্পে চাকরির জন্য আবেদনকারী প্রার্থীদের অনার্স সহ স্নাতক ডিগ্রি পাস করে থাকতে হবে। সেই সঙ্গে MS Office এর অন্তর্গত প্রতিটি Application এর মাধ্যমে কাজ করার জ্ঞান থাকতে হবে এবং Spread sheet, Tally ও Presentation Package এর কাজের বিষয়ে জ্ঞান থাকতে হবে। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট পদে যে কোনো সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কমকরে ৩ বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এক্ষেত্রে আবেদনকারীর বয়স হতে হবে ১/০১/২০২২ অনুযায়ী ১৮-৪০ বছরের মধ্যে। এই পদের জন্য নির্বাচিত প্রার্থীদের প্রতি মাসে ১৫,০০০ টাকা করে বেতন দেওয়া হবে।
প্রার্থী বাছাই পদ্ধতি:-
রাজ্য সরকারের তরফে প্রকাশিত কন্যাশ্রী প্রকল্পে চাকরির জন্য আবেদনকারী প্রার্থীদের আবেদন প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর প্রথমে সকলকে একটি ৫০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে। এই পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হবেন তাদের নাম শর্টলিস্ট করে দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা অর্থাৎ ৪০ নম্বরের কম্পিউটার টেস্টের জন্য ডাকা হবে। এতেও যারা উত্তীর্ণ হবেন তাদেরকে বাছাই করে ইন্টারভিউ লেটার পাঠিয়ে একটি ১০ নম্বরের ইন্টারভিউ এর জন্য ডাকা হবে। শেষ পর্যন্ত এই তিনটি ধাপ মিলিয়ে মোট ১০০ নম্বরের নেওয়া পরীক্ষায় যে যত বেশি নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হবেন সেই অনুযায়ী একটি ফাইনাল মেরিট লিস্ট তৈরী করে জয়েনিং লেটার পাঠিয়ে চাকরিতে নিয়োগ করা হবে।
আবেদনের সময়সীমা:-
এখানে চাকরির জন্য অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন পত্র জমা নেওয়া বেশ কিছুদিন ধরেই অর্থাৎ ১৫ ই ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে এবং এই প্রক্রিয়া চলবে আগামী ৩০ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত। তাই যারা আবেদন করতে চান তারা আর খুব বেশি দেরি না করে যত শীঘ্র সম্ভব আবেদন করে ফেলুন কারন আর হাতে আর মাত্র কয়েক দিন রয়েছে। তার পরেই সময় সীমা পেরিয়ে গেলে অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে।
পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে (Primary TET) বড় স্বস্তি পেলেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওপেন স্কুলিং (NIOS)…
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য বহু প্রতীক্ষিত ৭ম বেতন কমিশন (7th Pay Commission) নিয়ে অবশেষে…
পশ্চিমবঙ্গের ছাত্রছাত্রীদের জন্য নতুন সুসংবাদ নিয়ে এসেছে রাজ্য সরকার। ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য ‘Oasis Scholarship’ প্রকল্পের…
দেশের কোটি কোটি অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক ও বেকার যুবক-যুবতীদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার এক দুর্দান্ত সুযোগ…
আপনি বা আপনার পরিবারের কেউ যদি লক্ষী ভান্ডার প্রকল্পের মাধ্যমে টাকা পেয়ে থাকেন তাহলে আপনাদের…
দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান। অবশেষে সরকারি কর্মীদের জন্য নতুন একটি আপডেট। ভারতের কোটি কোটি কেন্দ্রীয় সরকারি…