বাংলার ঘরে ঘরে সরকারি চাকরি হবে এবার। আর কেউ থাকবে না এ রাজ্যে বেকার, শুরু হয়েছে বেকার নির্মূল অভিযান। সামনে রয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং এই পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই বিরাট বড় কর্মসংস্থানের ঘোষণা করা হলো। দীর্ঘদিন ধরে রাজ্যে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের টাকা আটকেছিল কেন্দ্রের কাছে অবশেষে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের টাকা দেওয়া হচ্ছে কেন্দ্র থেকে এবং ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে(MGNREGA)প্রচুর পরিমাণে কর্মী নিয়োগ করা হবে রাজ্যে, যেখানে পশ্চিমবঙ্গের ঘরে ঘরে চাকরি দেওয়া হবে। আর কেউ থাকবে না বেকার এমনটাই সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
আমাদের রাজ্যে বেকারত্বের গ্ৰাফ যেভাবে দিনে দিনে উর্ধ্বগামী হয়ে চলেছে তাতে করে এভাবে চলতে থাকলে খুব শীঘ্রই এমন এক দিন আসবে যেদিন পরিস্থিতি সামাল দেওয়া অসম্ভব ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে। তাই এমন দিনের সন্মুখীন যাতে আমাদের কাউকে হতে না হয় সেই কারণে আমাদের রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের বেকারত্বের হার কমাতে ইতিমধ্যেই “আমার কর্মদিশা” নামক একটি কর্মমুখী প্রকল্প চালু করেছেন। যে প্রকল্পের মাধ্যমে আমাদের রাজ্যের প্রতিটি বেকার যুবক যুবতীকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বিভিন্ন রকম প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রশিক্ষণ শেষে তাদের সরাসরি চাকরিতেও নিয়োগ করে দেবে সরকার। তবে এখানেই শেষ নয়। এই কর্মদিশা প্রকল্পের সাথে সাথে আরও একটি নতুন প্রকল্প চালু করলেন আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। যে প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের কোনো নির্দিষ্ট শিক্ষাগত যোগ্যতা ও প্রশিক্ষণ ছাড়াই সরাসরি চাকরিতে নিয়োগ করা হবে।
আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের আগেই এই নতুন প্রকল্প কার্যকর করে রাজ্যের বেকারত্ব দূরীকরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্যজুড়ে শুরু হবে বেকার নির্মূল অভিযান। নতুন এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের প্রতিটি ঘরে ঘরে বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থান গড়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। তিনি জানিয়েছেন যে এবার থেকে পশ্চিমবঙ্গে আর কোনো যুবক যুবতী বেকার থাকবে না। এবারে ঘরে ঘরে হবে চাকরি। যদিও রাজ্য সরকারের এই রুপ সিদ্ধান্ত কে নানান ভাবে কালিমা লিপ্ত করছেন রাজ্যের বিরোধী দল নেতারা। তারা এই মন্তব্য ই পোষন করছেন যে রাজ্য সরকারের এই রুপ উদ্যোগের কারন হল আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে নিজেদের জয়ের পথ প্রশস্ত করা। তবে যাই হোক রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীরা কর্মের সন্ধান পেলে সেটা বেকার যুবক-যুবতীদের কাছে অবশ্যই ভালো একটি শুভ বার্তা।
নতুন এই প্রকল্পের নাম হল “১০০ দিনের কাজের স্কিম”। যদিও এই প্রকল্পকে নতুন বলা ভুল কারন এই প্রকল্প বেশ অনেক বছর ধরেই আমাদের পশ্চিমবঙ্গে প্রচলিত এবং প্রায় সকলেই এই প্রকল্পের ব্যাপারে জানেন। কিন্তু তবুও এই প্রকল্পকে এই কারনেই নতুন বলা হচ্ছে কারণ এই এতে একটি নতুন নিয়ম যুক্ত হয়েছে। আমাদের রাজ্যের ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের বিরুদ্ধে অনেক দিন ধরেই নানান অভিযোগ আনছিলেন আমাদের রাজ্য তথা দেশের বিরোধী পক্ষরা। তারা বলছিলেন যে পশ্চিমবঙ্গের ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের মাধ্যমে নাকি বহু ব্যাক্তিকে ভুয়ো নামে টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে এমনকি কোনো কোনো জায়গায় নাকি কোনো নির্মানমূলক কাজ না করিয়েই জাল হিসেব দেখিয়ে সরকারের থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ নিয়ে নেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে আবার বলা হয়েছিল নেতা-মন্ত্রীরা তাকে তাদের পকেট ভরছে এইসব ভো কাজ দেখিয়ে এবং টাকা তাদের নিজেদের অ্যাকাউন্টে ঢুকিয়ে নিচ্ছে। আবার অনেক জায়গায় এমন অনেক অভিযোগ হয়েছে যেখানে কোন কাজ না করেই জনসাধারণের অ্যাকাউন্টে ভুয়ো টাকা ঢুকিয়ে দিয়ে নেতারা আবার তাদের থেকে আবার 50% টাকা নিয়ে নিয়েছে নেতারা। যদিও রাজ্য সরকার তা স্বীকার করতে নারাজ। তারা বলছেন যে ভারতে যতগুলি রাজ্য আছে তার মধ্যে নাকি পশ্চিমবঙ্গ ই ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে শ্রেষ্ঠ। একমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই নাকি সৎ ভাবে এই প্রকল্পের কাজ করা হয়। কিন্তু রাজ্য সরকারের এই কথা কোনো ভাবেই বিশ্বাস করতে পারছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে পশ্চিমবঙ্গের ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের দরুন অর্থ সাহায্য করা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যার ফলে চরম সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছে রাজ্য সরকারকে। যদিও আবার নতুন করে কেন্দ্র সরকার এই টাকা দিতে উদ্ধত হয়েছে।
তবে রাজ্যে কোথাও কোন ভুল কাজ হচ্ছে কিনা এবং কোন ভুল কাজ হচ্ছে কিনা এবং 100 দিনের কাজ সঠিকভাবে পরিচালনা করার জন্য রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রত্যেকটি অঞ্চলে এবং সমস্ত জায়গায় এই কার্য পরিচালনার জন্য কর্মী নিয়োগ করা হবে। আর তাই এবার থেকে সঠিক ভাবে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প পরিচালনা করার জন্য আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে সুপারভাইজার পদে কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যার ফলে একদিকে যেমন পশ্চিমবঙ্গের ঘরে ঘরে বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে অন্যদিকে এই পদে যাদের কাজে নিযুক্ত করা হবে তারা এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের যে যে জায়গায় ১০০ দিনের কাজ হবে সেখানে নিজেরা দাঁড়িয়ে থেকে কাজ করিয়ে কাজ কত দূর এগোলো, কত টাকা খরচ হল, আর কতটা কাজ বাকি আছে, তার জন্য কত টাকা লাগবে এই সব খবরাখবর যাতে সরকারকে দিতে পারে তাই এই রকম উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার।
ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত রাজ্যের পঞ্চায়েত কমিশনার জেলা শাসক কে জানিয়ে দিয়েছেন প্রত্যেকটি জেলায় জেলায় এবং প্রত্যেকটি গ্রাম পঞ্চায়েতে এই ১০০ দিনের কাজের নজরদারি করার জন্য তৃতীয় ব্যক্তিবর্গ কে নিযুক্ত করা প্রয়োজন। মূলত যারা যারা এখানে চাকরি পাবেন তাদের মূল কাজ হবে ১০০ দিনের কাজ কর্ম গুলো খাতিয়ে দেখা এবং কোন অভিযোগ থাকলে সেগুলো শুনতে হবে এবং সেগুলো উপর মহলে জানাতে হবে। এতদিন যে কাজ নেতা-মন্ত্রীরা করতো এবার সেই কাজের জন্য সরকারি কর্মী নিযুক্ত করা হবে।
এবং এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড়ো বিশেষত্ব হচ্ছে এটাই যে এই ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে সুপারভাইজার পদে যে সব কর্মী নিয়োগ করা হবে তাদের কাজের রিপোর্ট যদি ভালো হয় অর্থাৎ তারা যদি সরকারকে ঠিকঠাক খবরাখবর জোগাড় করে দিতে পারে এবং ৩০ দিনের মধ্যে যদি তাদের দেওয়া খবর সরকার হাজার যাচাই করেও কোনো ভাবেই ভুল প্রমাণিত করতে না পারে তাহলে সরকারের তরফ থেকে সেই ব্যাক্তিকে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের সুপারভাইজার পদে স্থায়ী ভাবে নিয়োগ করে দেওয়া হবে এবং সেই সঙ্গে তার বেতনও অনেক খানি বাড়িয়ে দেওয়া হবে।এবার থেকে রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীরা আশাবাদী তাদের বেকারত্ব খুঁজবে এবং রাজ্যে প্রচুর কর্মসন্ধান হবে।