পোস্ট অফিসের নয়া স্কিমে মাত্র 100 টাকা বিনিয়োগ করে পান 16 লক্ষ পর্যন্ত টাকা | Post Office New Scheme 2023

এখন থেকে ভারতীয় ডাকবিভাগের তরফ থেকে চালু করা বিশেষ এক স্কিমের মাধ্যমে পোস্ট অফিসে প্রতি মাসে অন্তত পক্ষে ১০০ টাকা করে জমা রেখে মেয়াদ শেষে পান লক্ষাধিক টাকা। এই কথা শুনে নিশ্চই অবাক হচ্ছেন? ভাবছেন এতো কম পরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করে এতো বেশি পরিমাণ টাকা কিভাবে ফেরত পাওয়া যাবে? এমন কোন স্কিম আছে যার দ্বারা এমনটা সম্ভব? এই স্কিমের সুবিধা উপভোগ করতে হলে কি করতে হবে? এই সব কিছুই ভাবছেন নিশ্চই? চিন্তা করার কিছু নেই। এই সব কিছুর বিষয়ে খুঁটিনাটি তথ্য আপনাদের পরিস্কার ভাবে বুঝিয়ে দিতে রইল আমাদের আজকের এই প্রতিবেদন। একটু ধৈর্য ধরে মন দিয়ে শেষ পর্যন্ত আমাদের আজকের এই প্রতিবেদনটি পড়ুন তাহলেই এই প্রকল্প সম্পর্কিত যাবতীয় খুঁটিনাটি তথ্য আপনাদের কাছে জলের মতো স্বচ্ছ হয়ে যাবে।

     

       আমাদের দেশের মোট জনসংখ্যার খুব কম সংখ্যক ই আছেন যারা সরকারি চাকুরিজীবী। তাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষই হল দরিদ্র শ্রেণীর দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ। সরকারি চাকুরিজীবীরা নাহলে চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর প্রতি মাসে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পেনশন হিসেবে পান। এছাড়াও গ্ৰ্যাচুইটি ও প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা তো আছেই। কিন্তু তাহলে আমাদের দেশের দরিদ্র শ্রেণীর দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলোর ভবিষ্যত কিভাবে সুনিশ্চিত হবে? তারা সারাদিন ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যে সামান্য পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেন তা দিয়ে এই অগ্নিমূল্যের বাজারে সংসার চালানো, ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া শেখানো এগুলোই ঠিকঠাক মতো মানুষ সামলে উঠতে পারছেন না তার উপরে আবার ভবিষ্যতের জন্য টাকা সঞ্চয় করে রাখা, কোথায় পাবেন তারা এতো টাকা? আর সবচেয়ে বড় সমস্যা হল বর্তমানে ব্যাঙ্ক গুলিতে অ্যাকাউন্ট খুলতে গেলেই কমকরে ৫০০-১,০০০ টাকা প্রয়োজন। যা সবার পক্ষে জোগাড় করা  সম্ভব হয় না। তাছাড়া ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুললে সেখানে তো আর ৫০/১০০ টাকা করে জমা দেওয়া যাবে না একটু বেশি পরিমাণ অর্থ ই জমা করতে হবে। তাই  দরিদ্র শ্রেণীর দিন আনা দিন খাওয়া মানুষরা তাদের সাধ্য অনুযায়ী সামান্য পরিমানে হলেও অর্থ যে ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করে রাখবেন সেই সুযোগ তাদের মেলে না। সবথেকে বড়ো সমস্যা হল যত দিন যাচ্ছে ব্যাঙ্ক গুলিতে সুদের হারও ক্রমশ কমছে। তাই মানুষ কষ্টশিষ্ট করে সেখানে কিছু পরিমাণ অর্থ জমালেও তার থেকে তেমন ভাবে লাভবান হতে পারছেন না। 

      কিন্তু আজ আমরা ভারতীয় ডাকবিভাগের তরফ থেকে চালু করা যে স্কিমের বিষয়ে আপনাদের জানাতে চলেছি সেখানে যে একসাথে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই। এখানে টাকা বিনিয়োগ করার জন্য কোনো রুপ নির্দিষ্ট অংকের সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি। প্রতি মাসে মাসে অন্তত পক্ষে ১০০ টাকা করে জমা রাখলেই মেয়াদ শেষে অর্থাৎ ৫ বছর পর আপনি উচ্চ হারে সুদ সহ একটা মোটা অংকের টাকা ফেরত পাবেন। তবে যদি কারোর আরও বেশি সাধ্য থাকে তাহলে সে বা তারা এই স্কিমে আরও বেশি পরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করতে পারেন। ভারতীয় ডাকবিভাগের তরফ থেকে চালু করা এই প্রকল্পের নাম হল “রেকারিং ডিপোজিট”। এই স্কিম নতুন নয়। বহু বছর আগেই ভারতীয় ডাকবিভাগের তরফ থেকে এই ডিপোজিট স্কিম চালু করা হয়েছিল। এই স্কিমের সঙ্গে হয়তো আপনারা অনেকেই পরিচিত। অনেকেই হয়তো ইতিমধ্যেই এই স্কিমের সুবিধাও লাভ করেছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত আমাদের দেশে এমন বহু মানুষ আছেন যারা এই স্কিমের বিষয়ে অবগত নন বা জানলেও সেভাবে বিশদে কিছু জানেন না তাই আজ পর্যন্ত এই স্কিমের সুবিধা লাভ করতে পারেননি। তাই তাদের জন্য আমাদের আজকের এই প্রতিবেদনটি খুবই উপকারী হতে চলেছে বলে আমাদের বিশ্বাস। তাহলে চলুন আর সময় নষ্ট না করে এই “রেকারিং ডিপোজিট” স্কিমের বিষয়ে খুঁটিনাটি তথ্য জেনে নেওয়া যাক। নিম্নে এই বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হল।

রেকারিং ডিপোজিট” স্কিমের মাধ্যমে কি কি সুবিধা পাওয়া যাবে?

ভারতীয় ডাকবিভাগের তরফ থেকে চালু করা এই স্কিমের মাধ্যমে যে যে সুবিধা গুলি পাওয়া যায় সেগুলি হল-

১) একজন এই স্কিমের আওতায় প্রতি মাসে যদি অন্তত পক্ষে ১০০ টাকা করে জমা রাখেন তাহলে তিনি ৫ বছর পর ৫.৮ % সুদের হারে একটা বেশ ভালো অংকের টাকাই ফেরত পাবেন।

২) এক্ষেত্রে কোনো ব্যাক্তি যদি মাসে মাসে ১০,০০০ টাকা করে ১০ বছরের জন্য জমা রাখেন তাহলে তিনি মেয়াদ শেষে ১৬ লক্ষ টাকার বেশি ফেরত পাবেন।

৩) এই স্কিমের আওতায় জমা রাখা টাকার প্রত্যেক ৩ মাস অন্তর হিসেবে যে পরিমাণ সুদ হয় তা বিনিয়োগকারীর অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়।

৪) এই স্কিমে সিঙ্গেল অ্যাকাউন্ট ছাড়াও জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট এবং একসঙ্গে তিন জনের নামেও অ্যাকাউন্ট খোলা যায়।

“রেকারিং ডিপোজিট” স্কিমের আওতায় নাম নথিভুক্ত করার জন্য কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে?

এই স্কিমের সুবিধা পেতে হলে একজন ব্যাক্তির যে সব যোগ্যতা গুলি থাকতে হবে সেগুলি হল-

১) আবেদনকারী ব্যাক্তিকে অবশ্যই ভারতের একজন স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।

২) আবেদনকারীর বয়স অবশ্যই ১০ বছরের উর্ধ্বে হতে হবে। তবে ১০ বছরের নীচে হলেও অসুবিধা নেই। সেক্ষেত্রে তার পিতা বা মাতার নামে এই স্কিমের অ্যাকাউন্ট খুলে সেখানে টাকা জমা রাখতে হবে।

কিভাবে আবেদন করতে হবে?

“রেকারিং ডিপোজিট” স্কিমে টাকা জমানোর জন্য আপনাকে আপনার নিকটবর্তী পোস্ট অফিসে গিয়ে সেখানকার ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে এই স্কিমের বিষয়ে আরও বিস্তারিত ভাবে কিছু জানার থাকলে তা জেনে সমস্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস জমা দিয়ে এই স্কিমের একটি অ্যাকাউন্ট খুলে প্রতি মাসে মাসে টাকা জমা রাখতে হবে।

কি কি ডকুমেন্টস জমা দিতে হবে?

এই স্কিমের মাধ্যমে অর্থ বিনিয়োগ করা শুরু করতে হলে যে যে ডকুমেন্টস গুলি জমা দিতে হবে সেগুলি হল-

১) আধার কার্ডের জেরক্স।

২) ভোটার কার্ডের জেরক্স।

৩) রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ফটো।

৪) পঞ্চায়েত প্রদত্ত স্থায়ী বাসিন্দার সার্টিফিকেট।

কতদিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে?

এখানে আবেদন করার কোনো রুপ শেষ সময় সীমা নেই। সব সময়ই আবেদন করা যায়। তাই আপনারা আপনাদের সুবিধা অনুযায়ী পোস্ট অফিস খোলা থাকাকালীন সময়ে গিয়ে আবেদন করতে পারবেন।


MORE JOB NEWS: CLICK HERE

চাকরির সম্বন্ধীয় আরো বিস্তারিত খবরা খবর পেতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল যুক্ত হন।
TELRGRAM CHANNEL:  CLICK HERE

Leave a comment