বেকার যুবক-যুবতী থেকে শুরু করে দেশের তথা রাজ্যের সমস্ত জনসাধারণের জন্য চলে এল নতুন করে বিশাল বড় একটি সুখবর। আমাদের দেশে এখনও পর্যন্ত এমন অনেক মহিলা শিক্ষার্থী আছে যারা উচ্চমাধ্যমিক স্তরে লেখাপড়া করাকালীন মনে মনে স্বপ্ন দেখে যে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করার পর তারা কারো অন্যান্য বিভিন্ন লাইন নিয়ে পড়াশোনা করবে। অনেকে কলেজে এডমিশন করে আবার অনেকে আরও অন্যান্য জায়গায় পড়াশোনা করতে থাকে। আবার অনেকেই কম্পিউটার সায়েন্স বা ইনফরমেশন টেকনোলজি নিয়ে পড়াশোনা করে টেকিনিক্যাল দিক দিয়ে পারদর্শী হয়ে কোনো এক নামকরা IT Company তে চাকরি করবে। এবার থেকে আর কোন চিন্তা নেই ছোট থেকে বড় সকলেই বার্ষিক পেয়ে যাবেন 40 হাজার টাকা করে। কিন্তু তাদের পরিবারের আর্থিক অসংগতির কারণে অনেকের ক্ষেত্রেই তা সম্ভব হয়ে ওঠে না। তার ফলে তাদের এই স্বপ্ন সারাটা জীবন ধরে স্বপ্ন হয়েই থেকে যায়। বাস্তব রূপ আর পায় না।
আর ঠিক সেই কারনেই এই সব দারিদ্র্য সীমার নীচে বসবাসকারী প্রতিটি পরিবারের মহিলা শিক্ষার্থীরা যারা উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর কম্পিউটার সায়েন্স বা ইনফরমেশন টেকনোলজি নিয়ে পড়াশোনা করতে চায় তারা যাতে তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারে অর্থের অভাবে যাতে তাদের স্বপ্ন কোনো ভাবে ভেঙে না যায় তাই বিশ্বের বিখ্যাত ই-কমার্স কোম্পানি Amazon ভারতে বসবাসকারী প্রতিটি অর্থনৈতিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া পরিবারের মহিলা শিক্ষার্থীকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করার পর ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা করে স্কলারশিপ দেওয়া চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
Amazon কোম্পানি কর্তৃক চালু করা এই নতুন স্কলারশিপের নাম হল Amazon Scholarship। যা আসলে Amazon Future Engineer Scholarship নামে পরিচিত। এই স্কলারশিপের মাধ্যমে প্রত্যেক দারিদ্র্য সীমার নীচে বসবাসকারী পরিবারের মহিলা শিক্ষার্থীকে বছরে ৪০,০০০ টাকা করে ৪ বছরে মোট ১,৬০,০০০ টাকা দেওয়া হবে। যা দিয়ে তারা Amazon কোম্পানিতেই কম্পিউটার সায়েন্স বা ইনফরমেশন টেকনোলজি তে ইঞ্জিনিয়ারিং বা ডিপ্লোমা কোর্সের প্রশিক্ষণ নিতে পারবে। এবং টেকনিক্যাল দিক থেকে দক্ষ হয়ে ওঠার পর প্রশিক্ষণ শেষে Amazon কোম্পানি তাদের নিজেদের কোম্পানিতেই সেই মহিলা শিক্ষার্থীদের চাকরির সুযোগ করে দেবে।অর্থাৎ এক কথায় বলতে গেলে বলতে হয় ভারতের প্রতিটি অর্থনৈতিক দিক থেকে পিছিয়ে থাকা পরিবারের মেধাবী মহিলা শিক্ষার্থীকে প্রযুক্তিগত ভাবে দক্ষ করে তুলতে উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়ে তোলার পথে অগ্ৰসর করে দেওয়াই হল Amazon কোম্পানির একমাত্র লক্ষ্য।
এই স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য আবেদন করতে হলে কি কি যোগ্যতা লাগবে?
এই Amazon স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য আবেদন করতে হলে আবেদনকারী মহিলা শিক্ষার্থীর যা যা যোগ্যতা থাকা দরকার সেগুলি হল-
• সর্বপরি আবেদনকারীকে ভারতের যে কোনো জায়গায় স্থায়ীভাবে বসবাসকারী একজন মহিলা শিক্ষার্থী হতে হবে।
• আবেদনকারী মহিলা শিক্ষার্থীকে অতি অবশ্যই কম্পিউটার সায়েন্স বা ইনফরমেশন টেকনোলজি তে B.E/ B.Tech কোর্সের প্রথম বর্ষের একজন ট্রেনি হতে হবে।
• আবেদনকারীর পরিবারের বার্ষিক আয় ৩,০০,০০০ টাকার নীচে হতে হবে।
• পরিবারের প্রথম মহিলা গ্ৰাজুয়েট শিক্ষার্থীরা অগ্ৰাধিকার পাবে।
Amazon স্কলারশিপের টাকা কবে এবং কিভাবে দেওয়া হবে?
Amazon কোম্পানির তরফ থেকে ভারতের প্রতিটি অর্থনৈতিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া পরিবারের মহিলা শিক্ষার্থীকে কম্পিউটার সায়েন্স বা ইনফরমেশন টেকনোলজি তে চার বছরের ডিপ্লোমা কোর্স Complete করার জন্য প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া থেকে শুরু করে শেষ বর্ষে ভর্তি হওয়া পর্যন্ত প্রত্যেক বছর বছর ৪০,০০০ টাকা করে মোট ১,৬০,০০০ টাকা করে স্কলারশিপ দেওয়া হবে। যার প্রথম কিস্তির টাকা আগামী নতুন বছরের ৩১ শে মার্চ দেওয়া হবে।
এই স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য কিভাবে আবেদন করতে হবে?
এই স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য আবেদনকারী প্রার্থীদের সম্পূর্ণ ভাবে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। এবং তার জন্য যা যা করতে হবে সেগুলি হল-
• সবার প্রথমে www.buddy4study.com এই অনলাইন পোর্টালে ঢুকে নিজের যাবতীয় প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে।
• এরপর বিভিন্ন ধরনের স্কলারশিপের নাম দেখতে পাবেন সেখান থেকে Amazon Future Engineer Scholarship এ ক্লিক করতে হবে।
• এরপর অ্যাপ্লিকেশান ফর্মের আকারে একটি নতুন window open হবে।
• এরপর এক এক করে সেই ফর্মে আপনার নিজের নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম, অভিভাবকের নাম, শিক্ষাগত যোগ্যতা, জেন্ডার, বয়স, ঠিকানা, আধার নম্বর, একটি বৈধ ইমেল আইডি ও ফোন নাম্বার ইত্যাদি লিখে ফিলাপ করে ফেলতে হবে।
• এরপর আবেদনকারী পড়ুয়ার নিজের একটি পাসপোর্ট সাইজের ফটো ও সিগনেচারের ছবি তুলে স্ক্যান করে ফর্মের নির্দিষ্ট স্থানে আপলোড করে দিতে হবে।
• এরপর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের মার্কসীট ও সার্টিফিকেট সহ অন্যান্য সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এর ছবি তুলে স্ক্যান করে ফর্মের নির্দিষ্ট স্থানে আপলোড করে সাবমিট করে দিলেই অ্যাপ্লিকেশান হয়ে যাবে।
প্রয়োজনীয় নথীপত্র:-
অনলাইনে আবেদন করার সময় আবেদন পত্রের সঙ্গে যে সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলি ও জমা দিতে হবে সেগুলি হল-
• মাধ্যমিকের অ্যাডমিট বা বার্থ সার্টিফিকেট স্ক্যান করা।
• আধার কার্ড স্ক্যান করা।
• মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের মার্কসীট ও সার্টিফিকেট স্ক্যান করা।
• এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ফটো স্ক্যান করা।
• ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের প্রথম পাতার জেরক্স স্ক্যান করা।
• পরিবারের বার্ষিক আয়ের একটি ইনকাম সার্টিফিকেট স্ক্যান করা।
• টিউশান, হোস্টেল ও মেসের খরচের রসিদ স্ক্যান করা।
• কলেজের যাবতীয় খরচ খরচাপাতির রসিদ স্ক্যান করা।
• আসন বরাদ্দের জন্য কাউন্সিলিং লেটার স্ক্যান করা।
প্রার্থী বাছাই পদ্ধতি:-
এই স্কলারশিপের জন্য আবেদনকারী প্রার্থীদের অনলাইন আবেদন পত্র জমা পড়ার পর ফাউন্ডেশান ফর এক্সিলেন্স ডিপার্টমেন্টের এর তরফ থেকে আবেদনকারী প্রার্থীদের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক এ পাওয়া নম্বরের ভিত্তিতে একটি মেরিট লিস্ট তৈরী করা হবে। এই লিস্টে যাদের নাম থাকবে তাদের স্কলারশিপ দিয়ে ট্রেনিং করিয়ে ট্রেনিং শেষে নিজেদের কোম্পানিতেই নিয়োগ করবে বিশ্ব বিখ্যাত ই কমার্স কোম্পানি Amazon।
আবেদনের সময় সীমা:-
এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন পত্র জমা নেওয়ার অনলাইন পোর্টাল ইতিমধ্যেই খুলে গিয়েছে। তাই যে সব দরিদ্র পরিবারের মহিলা শিক্ষার্থীরা উচ্চমাধ্যমিক পাস করে বসে আছেন তারা আর দেরি না করে আজই আবেদন করে ফেলুন। এবং Amazon কোম্পানির তরফ থেকে প্রতি বছর বছর স্কলারশিপ পেয়ে কম্পিউটার সায়েন্স বা ইনফরমেশন টেকনোলজি তে ইঞ্জিনিয়ারিং বা ডিপ্লোমা কোর্স Complete করুন আর Amazon কোম্পানিতে চাকরি করে জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়ে উঠুন।