রাজ্যের স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC)-এর ২৬,০০০ চাকরি বাতিল হওয়ার ঘটনায় এবার নতুন এক মোড়। ইতিমধ্যেই বরখাস্ত হওয়া গ্রুপ C ও গ্রুপ D কর্মীদের জন্য রাজ্য সরকার মাসিক ভাতা ঘোষণা করেছে। এবার বহু বেকার যুবক-যুবতীরা এই ভাতার চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে কেস করলেন। যারা চাকরি পাওয়ার যোগ্য ছিলেন অর্থাৎ যারা এই পরীক্ষায় পাস করে ওয়েটিং লিস্টে ছিলেন এই সমস্ত প্রার্থীরা এবার সেই সুবিধা চেয়ে হাইকোর্টে মামলা করলেন , এরা পরীক্ষায় পাশ করেও নিয়োগ পাননি।
সরকারের সিদ্ধান্ত ঘিরে বিতর্ক
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ সরকার জানিয়েছে, যেসব গ্রুপ C কর্মী “পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বনাম বৈশাখী হালদার” মামলার রায়ের পরে চাকরি হারিয়েছেন, তাঁদের প্রতি মাসে ₹২৫,০০০ টাকা এবং গ্রুপ D কর্মীদের ₹২০,০০০ টাকা ভাতা দেওয়া হবে। এই সুবিধা ১ এপ্রিল, ২০২৫ থেকে কার্যকর হয়েছে।
এই ঘোষণা আসার পরেই অনেক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ অথচ চাকরি না পাওয়া প্রার্থী অভিযোগ করে বলেন, “যদি অবৈধভাবে চাকরি পাওয়া কর্মীরা এখন ভাতা পেতে পারেন, তাহলে আমরা, যারা সত্যিই যোগ্য ছিলাম কিন্তু নিয়োগ পাইনি, তারাও ভাতার দাবিদার।”
বেকারদের পক্ষ থেকে মামলা
এই দাবিতে এবার কলকাতা হাইকোর্টে দুটি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে:
- গ্রুপ C মামলায় ১৫ জন আবেদনকারী রয়েছেন, যার মধ্যে অন্যতম হলেন বিকাশ দাস। তাঁরা প্রত্যেকে প্রতি মাসে ₹২৫,০০০ ভাতা দাবি করেছেন।
- গ্রুপ D মামলায় সুমন্ত সাহার নেতৃত্বে একাধিক আবেদনকারী ₹২০,০০০ ভাতা দাবি করেছেন।
এই দুই মামলায় মিলিয়ে মোট ২২ জন বেকার চাকরিপ্রার্থী আইনি লড়াইয়ে সামিল হয়েছেন।
তাঁদের বক্তব্য, তাঁরাও সমানভাবে ক্ষতিগ্রস্ত, কারণ তাঁদের কর্মসংস্থানের স্বপ্ন ভেঙে গিয়েছে অব্যবস্থাপনার কারণে।
আদালতের পরবর্তী পদক্ষেপ
বর্তমানে হাইকোর্টে গ্রীষ্মকালীন ছুটি চলছে এবং আগামী ১০ জুন, ২০২৫-এর পর এই মামলার শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে এই মামলাগুলি তোলা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মত
আইনি বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি আদালত এই মামলায় বেকার প্রার্থীদের পক্ষে রায় দেয়, তবে তা ভবিষ্যতে সরকারি নিয়োগে একটি বড় নজির তৈরি করবে। এতে আরও বহু পরীক্ষায় উত্তীর্ণ অথচ নিয়োগ না পাওয়া প্রার্থীরা একই ধরনের দাবিতে আদালতের শরণাপন্ন হতে পারেন।
এই মামলা নিঃসন্দেহে রাজ্যের SSC নিয়োগ কেলেঙ্কারিকে আরও গভীর সংকটে ফেলেছে। এখন সবাই তাকিয়ে আছেন আগামী ১০ জুনের দিকে—কেননা সেই দিনই স্থির হবে, যোগ্য অথচ বঞ্চিত বেকারদের দাবিকে আদৌ স্বীকৃতি দেবে কি না আদালত।